-পবিত্র মাহে রমজান আমাদেরকে যতগুলো সৎকাজের ডাক দিয়ে যায়, তার মধ্যে গরীব দুঃখীদের সহযোগিতা করা একটি অন্যতম ডাক।
পবিত্র মাহে রমজান সামাজিক ঐক্য ও নিরাপত্তা বিধানে এবং একটি সংঘাতমুক্ত গঠনমূলক আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। বিশেষ করে, সমাজে রোজাদারদের পারস্পরিক সমবেদনা, সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে রমজান মাসের রোজার ভূমিকা অপরিসীম।
সমাজে মানবতার ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মাহে রমজানের রোজার যথেষ্ট গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।
সিয়াম সাধনা বা রোজা পালন সমাজে সাহায্য-সহযোগিতা, সমবেদনা তথা সহমর্মিতা প্রদর্শনের অন্যতম মাধ্যম। সমাজজীবনে রোজাদার ধনী-গরিব ব্যক্তি মিলেমিশে ইবাদত করে একত্রে সমাজবদ্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করেন। প্রকৃত রোজাদার সমাজের কাউকে ঠকাতে বা কারও সঙ্গে প্রতারণা করতে পারেন না। রোজাদার কারও অনিষ্ট, অকল্যাণ ও ক্ষতিসাধন করবেন না; বরং মাহে রমজানে সমাজের অসহায়, হতদরিদ্র, দুর্বল, পীড়িত, অসুস্থ, অনাথ, ছিন্নমূল ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত নিরন্ন মানুষের খোঁজখবর রাখবেন, তাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করবেন, সেহ্রি-ইফতারের আয়োজন করবেন, যথাসম্ভব সাধ্য অনুযায়ী পরোপকারে ব্যস্ত থাকবেন।
রোজা রেখে আমরা ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করে ক্ষুধার্তদের খাবার দিব, বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দেব, সকল অভাবীর একান্ত আপন হয়ে পাশে দাঁড়াব, এটাই রমজানের অন্যতম শিক্ষা।
রোজাদারদের সম্মিলিত সাহায্য-সহযোগিতা ও সহমর্মিতা অনেক অসহায় মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। ফলে দারিদ্র্যের নিষ্ঠুর কশাঘাতে নিপতিত অনেক অনাহারী মানুষ ক্ষুধা-তৃষ্ণার অসহনীয় দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে। মাহে রমজান যেন সমাজের ধনী-গরিব মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা গড়ে ওঠার অবলম্বন হয় এবং সমাজ থেকে যেন সব ধরনের দুঃখ-কষ্ট, অরাজকতা-অনাচার দূরীভূত হয়, মানুষ যেন সত্য, সুন্দর ও মুক্তির পথ খুঁজে পায়।
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, যারা আন্তরিকতার সঙ্গে একমাত্র তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দান-খয়রাত করে এবং দান করার পর খোঁটা দেয় না, তাদের পুরস্কার আল্লাহর কাছে সুরক্ষিত আছে। আর আল্লাহর কাছে বান্দার কোনো কিছু সুরক্ষিত থাকা মানে তার তো আর দুশ্চিন্তার কোনো কারণই থাকতে পারে না।
Leave a Reply