শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা পরিকল্পিত। এ ঘটনায় থানায় যে মামলা হয়েছে, সেটি হালকা ধারায় নথিভুক্ত হয়েছে। তাই মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে গ্রহণ, সব আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও অভিযোগপত্র দিতে হবে।
শাল্লা সোচ্চার নাগরিক ফোরাম (সোচ্চার) সিলেট নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আয়োজক সংগঠনের সদস্য সুব্রত দাশ বলেন, নোয়াগাঁওয়ে হামলাটি পুর্বপরিকল্পিত এবং প্রশাসন এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা প্রতিরোধে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনের ব্যর্থতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ঘটনার পর নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদী হয়ে যে মামলাটি করেছেন সেটির বিষয়বস্তু ও গুরুত্ব বিবেচনায় এজহারটি আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন-২০০২ এর আওতায় নথিভুক্ত করা সমীচীন। কিন্তু পুলিশ সেটি করেনি। পুলিশ অপেক্ষাকৃত হালকা ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করেছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে রেকর্ড করা এবং দ্রুত অভিযোগপত্র দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের ওপর এ ধরণের হামল নতুন নয়। এর আগে চট্টগ্রামের রামু, রাক্ষ্রণবাড়িয়ার নাসিরনগর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাওতাল পল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং নোয়াগাঁও গ্রামের হামলা একই সূত্রে গাঁথা। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও লুটপাটের মাধ্যমে তাদের মনে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে সম্পত্তি দখল ও দেশছাড়া করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। নোয়াগাঁওয়ের ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের দ্বারা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন কুমার চক্রবর্তী, সদস্য জ্যোতিষ মজুমদার, দীলিপ কুমার দাস, প্রদ্যুৎ কান্তি মজুমদার ও ওমর চক্রবর্তী।
শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ঝুমন দাশ আপন (২৮) মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে গত ১৭ মার্চ সকালে শাল্লা উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাচনি, সন্তোষপুর ও চন্ডিপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ লাটিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে তা-ব চালায়। হামলার ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
Leave a Reply